জিরো বাউন্ডারি কবিতার চতুর্থ সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট মার্চ মাসের ১০ তারিখ। দুটো কবিতা বা কবিতা বিষয়ক লেখা নিজের এক কপি ছবি সমেত পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেলে-0boundarykabita17@gmail.com

আফজল আলি



সেমিকোলনে দাঁড়িয়ে আছে জিরাফ


প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে বুকে । এরকমই হওয়ার কথা । লেপের ভিতর কয়েকটা শূন্যতাকে আমি উন্মাদ করে দিয়েছি । কোথাও চোখের পানি ফেলার জায়গা নেই   আর্যসভ্যতা থেকে ঘাম মুছতে মুছতে জীবনের কোলাহল অনিবার্যতার দিকে । কী এমন করতে পারি ,  কী ই বা করা যাবে । পরাবাস্তবতার দুপুরে কেউ কথা বলেনি আমার সাথে  ,  কাউকে ই জিজ্ঞাসা করা হয়নি -   শুধু অস্থির এক দোলাচল বুকের পাঁজরে ধাক্কা দিচ্ছিল। জানি অতিরিক্ত ক্ষরণের শেষে কোন দিকে চাঁদ উঠতে পারে সেরকম সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছি । ভাবনারা অবিন্যস্ত ,  স্রোত আমাকে চেনে না । ফলে  নিজস্ব অনুভূতিগুলো আরো কিছু ঘনিষ্ঠতা চাইতে পারে -  অনুভবে কাপড় টাঙাচ্ছিলাম তারে।সর্বক্ষণ বাঁচতে চেয়ে সন্ধ্যার কার্নিসে যারা যারা চোখ বন্ধ রেখেছিল  -  পূর্ব থেকে পশ্চিমে তারা ছিল মেঘ। স্মৃতি আমার ভালোবাসার দাসত্ব খুঁজছিল  ;  ঠিক ই তো কাকেই বুঝিয়ে বলি  - কেউ তো বোঝে না । 

আমাদের অন্ধকার বোঝেনি কেউ,  আমাদের আলো বোঝেনি কেউ,  আমাদের কুয়াশা ছিল মনের মতো ।তাই বুঝি সন্ধ্যার মধ্যবর্তী পলাশের রঙ আঙুলের ঘনত্ব মেপে দেখতে চায় -  আমি অভিমানের সকালে দ্বিতীয়বার আত্মহত্যা করতে পারি কিনা । এসো বন্ধু  হাত সরিয়ে নিও না । জানি ভাবের এই ইঙ্গিতগুলো আমার জন্য উত্কর্ষ নয় । দেখো একদিন তোমাদের ঠিক এক্সরশ্মি উপহার দেব । কবিতা বলে যত উত্পীড়ন সহ্য করেছো ,  তেমন তো নয় হৃদয়ের দাগ । তাহলে বাদ দাও । জীবন তোমাকে বাঁচতে দেবে না  ;  চতুষ্পদী প্রাণীদের কোলাহল দেখে ঠিক বিপরীত অন্ধত্বে আমি নিরূপণ করতে থাকি   এমনই কী ছিল চিত্কার । 
      তার দেখা পাইনি  -  সে ও অন্ধ ছিল না আমাকে ঘুমের পরিবর্তে স্বপ্ন দিয়েছিল । আমি অভ্যাস করছিলাম ঠিক কতটা খারাপ থাকতে হলে,  কতটা ভালো থাকা যায় । অথবা ভালো থাকা যাবে না এমন ভেবেই শুধরে নেওয়া । বিকেল ক্ষয়েছে । কবেকার চেনা বাতাসের সুগন্ধ গদ্যের মতো উড়ে আসছে  -  যখন মুক্তির কথা ভাবছিলাম তখন চিন্তা ছিল দ্বিধাগ্রস্ত । আজ কেন এত মোচড়  -  আগন্তুকের পায়ের ছাপ।

তুমি বাজনা বাজাও বিষাদের । আমি বসে থাকি গাছের নীচে । চেনা মুখ যদি অচেনা হয়ে যায়  -  বন্ধু,   নাম ধরে ডেকো ।
এইভাবে কথার দিকে ফিরে যাচ্ছি । পাখি ডাকছে  -  ওহ্ 
- - কেমন আছো বন্ধু 
- - মন ভালো নাই
-  অতীন্দ্রিয়  বালকের মতো ওপারের দৃষ্টিতে  যদি চেয়ে থাকো ,  তবেই দেখতে পাবে 
-  কী দেখতে পাবো
-  মন ভালো করার মতো কিছু 

পাখি আপন মনে গান গেয়ে যায় 
"  কই ও বন্ধু কাজল ভ্রমরা রে 
কোনদিন আসিবে বন্ধু কইয়া যাও কইয়া যাও রে " 
- এ দিকে এসো না পথিক 
এ দিকে অনেক ব্যথা 
মন যদি শূন্য তোমার 
কেন তবে নীরবতা - 

আন্তঃরাজ্যে ডেকেছি । শব্দ হচ্ছে বিপবিপ । সমাধানের সমদূরত্বে কোনো এক উটপাখী ধর্না দিয়ে ছিল,   সেই থেকে আমার মন ,  মনের বাইরের উচাটন। শস্যধারার প্রান্তে তোমাকে কী নামে ডাকব । আকাশ জরিমানা করে । বাতাসের গুপ্ত গুহায় জীবন খুব সংকীর্ণ ছিল না । বাইশন এঁকেছি , উন্মুক্ত শিরায় ওড়াউড়ি করছে মাছি । যা ছিল আমার শব্দ ভ্রমণ,   সেখানেই রয়ে গেছে নিরাভরণ । আর্তনাদ শুনে শুনে আলোরা কাঁপছে । অপরিণামদর্শী ব্যথার মাঝে ঘুমিয়ে পড়লে কোথা থেকে শুরু হবে নাস্তানাবুদ । 

- - শুনতে পাচ্ছো ?  এদিকে কান পাতো । শব্দের ময়ূরাক্ষী নদীতে কীরকম নিস্তব্ধতার স্রোত । মন রাখো বেদনার স্মৃতিতে । আহা যেন ডাসা পেয়ারা । সব উদব্যস্ততা নিয়ে পালায় ওই পাখির দল । -  -  কী সব যা তা বলছ 
-   যা তা নয় গো। সব ঠিক । অভাবী চাঁদ এসে ধুয়ে দেবে মন ,  এমন অনুসন্ধান নেই । বসে থাকো গাছের নীচে জন্মান্তরবাদের প্রতীক্ষায় । গাছ শুধু ভালবাসা দেয় । বিনিময় চায় না কিছু । 

 - -  নদীতে বান ডাকলে কেউ চিনল না আমাকে । পরিচয়ের সংক্ষিপ্ত আকার নদীর জলে দিলাম ভাসিয়ে ।

- -  সেই ভালো সেই ভালো । আগন্তুক চিনিয়ে দাও মনের কথা , তোমাদের মানুষের ভাষা । এসো আর ইকটু শীতল হও । যতটা দিয়েছো ততটা ফিরে পাবে না কখনও । দেবতারা ফিরে গেছে । ভগবান নিশ্চুপ ।

অবিরাম স্রোতে চতুর্দিক ভাঙছে পাড়। সময় সেমিকোলনে দাঁড়িয়ে আছে জিরাফ । মন অস্থির;   যন্ত্রণার জন্য আজ কোনো তাপমাত্রা ধারণ করব না । আর যত দুঃখ নিরূপণ করে গেছো সেখানেই থাক ভালবাসার ধন । শেষ হবে না জেনেছি   অনুনয় হিসেব উচ্চারণের ঢাকনা খোলা 





No comments:

Post a Comment